কুরআনুল কারীম নিয়ে দিনলিপি
লিখেছেন লিখেছেন আওণ রাহ'বার ১৭ মার্চ, ২০১৫, ০৯:০৪:৫৮ সকাল
দিনলিপি-১৫১
(১৫-০৩-২০১৫)
*** আমরা অতি ভক্তি করতে গিয়ে বাড়াবাড়ি করে ফেলি। অনেক সময় এই অতিভক্তির কারণে সাধারণ আমলগুলোও বাদ পড়ে যায়। বড় বড় আমল থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ি। এই বিষয়টা চিন্তা করতে গিয়েই আজকের লেখাটার জন্ম।
*** আমাদের মাদরাসায় একটা নিয়ম হলো, আরবি তারিখ মিলিয়ে কুরআন কারীম থেকে এক পারা তিলাওয়াত করা। যেমন আজ ২৩ তারিখ। আমরা নামাযের আগে পরে, সময়ের ফাঁকে ফাঁকে তেইশ নাম্বার পারাটা তিলাওয়াত করার চেষ্টা করবো,ইনশাআল্লাহ। হাফেযদের একটা পারা ভাল করে পড়লে সর্বোচ্চ বিশ মিনিট লাগে। দ্রুত পড়লে চৌদ্দ থেকে সতের মিনিট লাগে। প্রতি নামাযের সময় চার পৃষ্ঠা বরাদ্দ করলে, পাঁচ নামাযে বিশ পৃষ্ঠা। সুন্দর ও সহজ।
*** নামাযের আগে, জামাত দাঁড়ানোর আগে অপেক্ষার সময়টাতে, বসে বসে কুরআন তিলাওয়াত করা আমার খুবই প্রিয় একটা শখ। সেদিনও তিলাওয়াত করছিলাম। ইকামত হলো। কুরআন কারীমখানা রেহালের ওপর রেখে নামাযে দাঁড়াতে যাব, পাশ থেকে এক ভাই বলে উঠলেন:
-হুযুর! কোরান শরীফটা এভাবেই রেখে দিলেন যে?
তাকিয়ে দেখলাম প্রশ্নকারী ঢাকার এক স্বনামধন্য সরকারি হাসপাতালের উচ্চপদস্থ ডাক্তার। আমি বললাম:
-কেন কী হয়েছে?
-কোরান শরীফকে উপরে তুলে রাখেন। এখানে নিচের রাখলে কুরআন শরীফের অসম্মান হবে।
*** আমার নামাযটাই মাটি করে দিল। নামাযের মধ্যেও ভাবনাটাকে আটকাতে পারলাম না। আমরা কুরআন কারীমকে বেশি সম্মান দেখাতে গিয়ে, একেবারে আলমারিতে গিলাফবদ্ধ করে রেখে দিই। কুরআন কারীম থাকবে হাতে-পকেটে। নাগালের মধ্যে।
ডাক্তার সাহেবের কথামত এখন যদি কুরআন কারীমটা রেহালের ওপর না রেখে, উঠে গিয়ে তাকে রেখে আসি, নামাযের পর কিভাবে পড়বো? অনেক সময় এমন হয়, আমার সুন্নাত পড়া শেষ, কিন্তু পেছনে আরেক জন তখনো তন্ময় হয়ে নামায পড়েই চলেছেন, এই সময়টুকু আমি বসে না থেকে, হাত টেনে কুরআন কারীমখানা নিই। দূরের তাকে রেখে এলে সেটা কিভাবে সম্ভব হয়ে?
শুধু শুধু বসে থাকার চেয়ে কুরআন কারীম নিয়ে থাকাই তো ভাল। মুখস্থও পড়া যায়, কিন্তু কুরআন কারীম হাতে নিয়ে, দেখে দেখে পড়তেই বেশি আমোদ লাগে। হাতের নাগালে না থাকলে কি সেই আমোদ-আমেজটা পাওয়া যাবে?
*** কুরআন কারীমকে বুকে লাগিয়ে বসে থাকতে কি যে আনন্দ লাগে, বলে বোঝানো যাবে না। যখন হাফেয হয়ে বের হয়েছি, কী এক প্রয়োজনে, কুরআন কারীমকে একদম বুকের সাথে লেপ্টে ধরে, আল্লাহর দরবারে দু‘আ করেছিলাম। সেদিন এক অদ্ভূত অভিজ্ঞতা হয়েছিল, কুরআন কারীমকে বুকের সাথে চেপে ধরার সাথে সাথেই, পুরো শরীরে কিসের যেন শিহরণ বয়ে গেল। শিরা-উপশিরায় রক্ত-কণিকার ছোটাছুটি শুরু হয়ে গেল। মনে হলো আমার মধ্যে কিছু একটা হয়েছে।
সেই থেকেই, মন খারাপ হলে, কোনও সমস্যায় পড়লে, কুরআন কারীমকে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকি। ভাল লাগে। স্বস্তি পাই। নিরাময় বোধ হয়। একজন হালাল মানবীকে জড়িয়ে ধরার আনন্দের চেয়ে অনেক বেশি সুখকর কুরআন কারীমকে জড়িয়ে ধরা।
*** একেবারে যখন ছোট, নাযেরা পড়ি। একদিন দেখলাম মাদরাসার হুযুররা রেডিওর ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে কী একটা খবর শুনছেন। খবরটা শুনে মামাকে দেখলাম অঝোরে কাঁদছেন। কে মারা গেলেন?
-পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক বিমান দুর্ঘটনায় শহীদ হয়েছেন। ইসরাঈলের দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদের’ পাতা টাইম বোমা বিস্ফোরণে।
*** তখন একটা খবর আমাকে বেশ নাড়া দিয়েছিল, কচিমনে রেখাপাত করেছিল- জেনারেল জিয়ার পুরো শরীরটাই পুড়ে দিয়েছিল। কিন্তু বুকপকেটে থাকা ছোট্ট কুরআনখানা পোড়েনি। তথ্যটা সেই ছোট্ট বয়েসেই মনের মণিকোঠায় ঠাঁই নিয়েছিল। আমার মনের মুকুরে সেদিন থেকে একটা ইচ্ছা দানা বাঁধতে শুরু করেছিল:
-আমিও সব সময় সাথে একটা ছোট্ট কুরআন কারীম রাখব। আদর করে পুষবো।
*** দুই কি তিন বছর আগে, বাসে করে এক জায়গায় যাচ্ছিলাম। বাস চলা শুরু করার পর চালক গান চালিয়ে দিল। কিছু চালকদের গানের রুচি দেখলে বমি আসতে চায়। অন্যদিন আমি পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে মোবাইলে তিলাওয়াত বা বয়ান শুনি। তাই করতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু কানে একটু ভিন্নধর্মী বক্তব্য আসাতে হাতটা থেমে গেল। একজন উপস্থাপক বললো:
-এখন গান পরিবেশন করবেন নকুল বিশ্বাস।
গায়ক মাইক্রোফোন নিয়ে ছোট্ট একটা ভূমিকা দিলেন:
-আমি এখন আপনাদের সামনে একটা গান গাইব। গানটা সাধারণ কোনও বিষয় নিয়ে নয়। অসাধারণ অপার্থিব একটা বিষয় নিয়ে। সেটা হলো কুরআন শরীফ। আমি কুরআন শরীফ নিয়ে একটা গান বেঁধেছি।
=আমার কৌতূহল আরো বেড়ে গেল। একজন অমুসলিম কুরআন নিয়ে গান বেঁধেছেন!
*** গায়ক গান শুরু করলেন। শুনবো না শুনবো করেও পুরো গানটাই শুনে ফেললাম। পরে ঘরে এসে ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে সেটার আরো কয়েকটা ভার্সন উদ্ধার করলাম। মূল আকর্ষণটাই ছিল গায়কের মন কেমন করে দেয়া ছোট্ট ভূমিকাটুকু। তিনি বলেছিলেন:
-প্রতিটি গানের পেছনেই একটা না একটা গল্প থাকে। আমি এখন কুরআন শরীফ নিয়ে যে গানটা আমি গাইব তার পেছনেও একটা গল্প আছে।
= গত বছর রমযানের ঘটনা। আমি ঈদের দিন বাসায় বসে টিভি দেখছিলাম। হঠাৎ করে স্ক্রীনে দেখলাম:
= ফ্লোরিডার এক ধর্মযাজক, টেরি জোনস। সে ঘোষণা দিল, ঈদের দিন কোরআন শরীফকে আগুন দিয়ে পোড়াবে।
কতবড় সাংঘাতিক একটা বেদনার বিষয়; কুরআন শরীফের মতো একটা মহাপবিত্র গ্রন্থ আগুন ধরিয়ে পোড়াবে, এটা এতবড় অপমান এবং আঘাত, যা সহ্য করার মতো নয়।
তখন থেকেই আমার ভেতরে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলো, এর প্রতিবাদে আমাকে কিছু লিখতে হবে। গাইতে হবে।
= আমি কিন্তু ইসলামী ইতিহাসের ছাত্র। সেই সুবাদে হযরত মুহাম্মাদ (সা.) আমার অত্যন্ত প্রিয় ব্যক্তিত্ব। আমি তার ভীষণ ভক্ত।
তো সেই ঈদের দিনই একটা চ্যানেলে আমার একটা লাইভ প্রোগ্রাম ছিল। সেই প্রোগ্রামের এক ফাঁকে একজন ভক্ত বললো:
-দাদা! আপনি তো একজন প্রগতিশীল মানুষ এবং একজন অসাম্প্রদায়িক শিল্পী। তো আপনার কী প্রতিক্রিয়া, একজন যাজক কোরআন শরীফ আগুন দিয়ে পোড়াতে চায়। আপনি খবরে দেখেছেন নিশ্চয়ই বিষয়টা?
-জ্বি, দেখেছি।
-তো দাদা! আপনি যদি এ বিষয়ে আপনার বক্তব্যটা আমাদের বলতেন!
= এরপর আমাদের প্রোগ্রামের মাঝে এক ঘণ্টার একটা ব্রেক (বিরতি) ছিল। সেই ব্রেকের মধ্যেই আমি মূলত গানটা লিখেছিলাম। ব্রেকের পরপরই আমি তরতাজা গানটা পরিবেশন করেছিলাম। আমার ভীষণ ভীষণ ভালো লেগেছিল, আমি আমার অবস্থান থেকে অন্তত অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পেরেছি:
*** গানের চুম্বকাংশ এই:
= আমি বললাম, শুধু একখানা কোরআন শরীফ কেন বন্ধু!
যদি আগুন লেগে, ধ্বংস হয়! পৃথিবীর সব বইয়ের দোকান, তবু বিশ্ব থেকে হারাবে না পবিত্র কুরআন।
= করবে কেমন করে কোরআন ধ্বংস, আগুনেরও তেজ। আছে বিশ্বভরা লক্ষ লক্ষ কুরআনে হাফেয!
*** এরপর তিনি গান থামিয়ে কথা বললেন:
-আমি যেটা বলতে চেয়েছি, শুধু আবেগ দিয়ে নয়। ইসলাম ধর্মে কুরআন শরীফকে মুখস্থ রাখার নিয়ম রয়েছে। তো এই কুরআন শরীফকে যারা মুখস্থ রাখতে পারে, তাদেরকে বলা হয় কুরআনে হাফেয। একজন কুরআনে হাফেয মানে হচ্ছে, একেকটা চলন্ত কুরআন শরীফ। পৃথিবীর সমস্ত বই যদি ধ্বংস হয়ে যায়, পুড়ে ছাই হয়ে যায়, যতদিন পর্যন্ত একজনও কুরআনে হাফেয বেঁচে থাকবেন পৃথিবীর বুকে ততদিন পর্যন্ত কুরআন শরীফের মৃত্যু নেই। আর আমি সেই লজিকটাই আমার গানের মধ্যে দিয়েছি।
কুরআন শরীফের বিরুদ্ধে এর আগেও অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। ভারতে একবার কুরআন শরীফকে ব্যানড করে দেয়ার জন্যে মামলা করা হয়েছিল। ব্রিটিশ নাগরিক শালমান রুশদি কুরআন শরীফকে বিকৃত করে লিখেছিলেন স্যাটানিক ভার্সেস।
= পাকিস্তানের জিয়া মরলো দুর্ঘটনায় ভাই, তার বিমান পুড়ে ছাই হয়েছে, কুরআন পোড়ে নাই!
*** নকুল বিশ্বাসের (রাব্বে কারীম তাকে হিদায়াত নসীব করুন) এই লাইনটা শোনার পরই আমি ভীষণ আমি চমকে উঠলাম। আমার সেই ফেলে আসা শৈশবের ইচ্ছের কথা মনে পড়লো। আবার নতুন করে স্বপ্ন জাগলো:
-আমিও জিয়াউল হকের মতো একটা ছোট্ট কুরআন পুষবো। সব সময় সাথে রাখবো।
আমার বুকপকেটে সব সময় একটা জোনাকি পোকা থাকবে। আমার জোনাকিপোকা হলো-কুরআন কারীম।
*** জামা সেলাই করার সময় দর্জিকে বলে দিলাম:
- ভাই ভেতরের পকেটটা একটু বড় করে রাখবেন।
-কেন?
-কুরআন কারীম রাখবো সেটাতে।
-আল্লাহ! আপনি বগলের নিচে কুরআন কারীম রাখবেন?
= অতি ভক্তি!
*** আরেকবার জামা সেলাই করতে গিয়ে দর্জিকে বললাম:
-আপনারা ভেতরের পকেট কোন দিকে রাখেন?
-বামদিকে।
-আমার পকেটটা ডানদিকে রাখবেন।
-কেন সবাই তো বামদিকেই দেয়?
-আমি ওই পকেটে টাকা নয়, কুরআন কারীম রাখব।
-পকেটে কুরআন কারীম রাখবেন? বেয়াদবি হয়ে যাবে না?
*** আরেক বার জামা সেলাই করতে গিয়ে বললাম:
-আমি একদম বুকের ওপর একটা পকেট রাখতে চাই। কুরআন কারীম রাখব সেটাতে।
-ঠিক আছে।
-পকেটের ওপরদিকটা ঢাকা থাকবে, সেই ঢাকনায় চেইন বা বোতামও থাকবে, যাতে রুকু-সিজদার সময় পড়ে না যায়। তবে পকেটের কোনার দিকটাতে একটু কাটা থাকবে, ওখানে যাতে একটা কলম রাখতে পারি। আর হ্যাঁ পকেটটা কোন পাশে দিবেন?
-কেন ডান পাশে?
-না বামপাশে দিবেন।
-কুরআন কারীম রাখবেন বলেছিলেন না? তাহলে তো ডানপাশে রাখাই উত্তম!
- না, তা হোক, আপনি বাম পাশেই পকেটটা রাখবেন।
-বামপাশে কুরআন কারীম রাখলে কেমন দেখাবে না?
-(ওরে আদবঅলারে!) বাম পাশে রাখার কারণ হলো, বুযুর্গানে কেরাম বলেছেন, কলব থাকে বাম পাশে, আমি চাই আমার দুষ্ট কলবটা সব সময় কুরআন দিয়ে চাপা থাকুক! যাতে বেশি বেগড়বাঁই করতে না পারে!
*** পাঞ্জাবীতে বুকপকেট রাখতে গিয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতেও পড়তে হয়েছে। এক দিন বাসে করে কোথায় যেন যাচ্ছিলাম। পাশেই আরেক হুযুর বসা। তিনি কিছুক্ষণ পর ফস করে প্রশ্ন করলেন:
-হযরতের দরবারে কি নিয়মিতই আসা-যাওয়া করেন?
আমি তো ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম। কোনও পূর্ব-পরিচয় ছাড়া, ভূমিকা ছাড়া এভাবে সরাসরি প্রশ্ন তো কেউ করে না। তারপরও আমি ভাবলাম, আমাকে হয়তো হযরতের খানকায় দেখেছে। আমি বললাম:
-জ্বি, নিয়মিত হাজিরা দেওয়ার চেষ্টা করি। মাঝেমধ্যে শয়তানের ওয়াসওয়াসায় পড়ে ছুটে যায়।
-এই সপ্তাহের জুমার পরের বয়ানটা শুনেছেন?
-জুমার পরের বয়ান? আপনি কোনও হযরতের কথা বলছেন?
-কেন, ঢালকানগর হযরতের কথা বলছি?
-ও আচ্ছা, তাই বলেন। আমি তো ভেবেছি আপনি প্রফেসর হযরতের কথা বলছেন!
-আপনি তাহলে আবদুল মতীন সাহেবের মুরীদ নন?
-জ্বি না।
-আমি তো আপনার জামা দেখে ভেবেছি আপনি হযরতের মুরীদ।
-জামা দেখে কিভাবে বুুঝলেন?
-কেন বুকের পকেট দেখে! হযরতের ওখানে যারা যায়, তারা তো হযরতের মতো বুকপকেটঅলা জামা পরে থাকে।
= এরপর থেকে (ভয়ে) বুকপকেটঅলা জামা পরে বাইরে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। আবার কখন কে এসে ধরে! আমার কুরআন আমার ভেতরের পকেটের গহীনেই সংগোপনে থাক!
*** আমার একটা শখ হলো বিভিন্ন আকারের কুরআন কারীম সংগ্রহ করা। পিচ্চি-পিচ্চি, ছোট-ছোট, মাঝারি-মাঝারি, সেজ-সেজ, বড়-বড়, বিরাট-বিরাট। নানা আকৃতির কুরআন কারীম কিনে রেখেছি। বড় সাইজের বুখারি শরীফের মতো একটা কুরআন কারীমও ভাগ্যক্রমে সংগ্রহ করতে পেরেছি। আমার এখন লোভ হলো, বিশ্বের সবচাইতে বড় ও ছোট কুরআন কারীমখানা হাতানো। চুরি করে হোক, ডাকাতি করেই হোক। দেখি কী করা যায়।
*** এত রকমের কুরআনের মাঝেও, এখন পর্যন্ত আমার মনের মতো সাইজে ছাপা হওয়া একটা কুরআন মিলল না। আমি দুই রকমের কুরআন কারীম খুঁজছি:
এক: পিচ্চি, উসমানী লিপিতে ছাপা, একটা হাফেযী কুরআন শরীফ। পকেটে রাখার জন্যে।
দুই: আমার প্রতিদিনের দরসে ব্যবহার করার জন্যে একটা মাঝারি আকৃতির কুরআন কারীম। যেটার চারপাশের বর্ডারে অনেক জায়গা থাকবে। নিজের ইচ্ছে মতো নোট লেখা যাবে, তবুও জায়গা ফুরোবে না। এখন যেটা দরসের (ক্লাস) জন্যে ব্যবহার করি, সেটা তো এমদাদিয়ার ছাপা, সেটার চারপাশের বর্ডারে আর খালি জায়গা নেই, ঠাঁই নেই ঠাঁই নেই অবস্থা। হিজিবিজি নোট লিখতে লিখতে, এখন এমন হয়েছে, নিজেই নিজের লেখার পাঠোদ্ধার করতে করতে কষ্ট হয়। অনেক জায়গায় তো এত দুর্বোধ্য হয়ে গেছে যে,প্রাচীন মিশরীয় হায়ারোগ্লাফিক তো কো ছার, হালের ম্যান্ডারিন অক্ষরও এর চেয়ে সুবোধ্য মনে হয়।
*** কিন্তু কী আর করা, মনের মতো দুইটা কুরআন খুঁজছি। কবে যে মিলবে?
-শাইখ মুহাম্মাদ আতিকুল্লাহ
-সূত্র: https://www.facebook.com/atik.ullah.589/posts/867298699998153
বিষয়: সাহিত্য
২১০৩ বার পঠিত, ৩৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
হা আসলে আমারা লক্ষ্য ভুলে উপলক্ষ্য নিয়ে বেশি মাতামাতি করি।
আমাদের দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন করতে হবে।
জাজাকাল্লাহু খাইরান ভাইয়া।
অনেক জাজাকিল্লাহ খাইরান ভাইয়া হৃদয় ছোঁয়া লেখাটা শেয়ারের জন্য ।
আমি এও বিশ্বাস করি, কুরআন কারীম মাখলুক নয়। আল্লাহর সৃষ্টি নয়। কুরআন আল্লাহর কালাম। আর ‘কালাম’ আল্লাহর একটা সিফাত। আল্লাহ তা‘আলা যেমন চিরস্থায়ী, তার সিফাত-বৈশিষ্ট্যও চিরস্থায়ী।
-শাইখ মুহাম্মাদ আতিকুল্লাহ
"তোমাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ পুচ্চিমনি।
আসলে লেখক আমার খুব প্রিয় একজন মানুষ তার প্রায় সব লেখা আমি ফেসবুকে পড়ি।
জাজাকা্ল্লাহ
-জামা দেখে কিভাবে বুুঝলেন?
-কেন বুকের পকেট দেখে! হযরতের ওখানে যারা যায়, তারা তো হযরতের মতো বুকপকেটঅলা জামা পরে থাকে।
হাহাহা আমি ভাবছিলাম ছোটভাই বোধহয় হাফেজ.......
অনেক ভাল লাগল পড়ে।
আমি এও বিশ্বাস করি, কুরআন কারীম মাখলুক নয়। আল্লাহর সৃষ্টি নয়। কুরআন আল্লাহর কালাম। আর ‘কালাম’ আল্লাহর একটা সিফাত। আল্লাহ তা‘আলা যেমন চিরস্থায়ী, তার সিফাত-বৈশিষ্ট্যও চিরস্থায়ী।
-শাইখ মুহাম্মাদ আতিকুল্লাহ
শাইখ মুহাম্মাদ আতিকুল্লাহ হাফেজ।
আমারতো মাদ্রাসার বারান্দায় যাওয়ার ও তৌফিক হয়নাই।
জাজাকাল্লাহ ভাইয়া
যদি আগুন লেগে, ধ্বংস হয়! পৃথিবীর সব বইয়ের দোকান, তবু বিশ্ব থেকে হারাবে না পবিত্র কুরআন।
= করবে কেমন করে কোরআন ধ্বংস, আগুনেরও তেজ। আছে বিশ্বভরা লক্ষ লক্ষ কুরআনে হাফেয!
ভাললাগার মত ব্যপার বটে। আমি গানটি সংগ্রহ করে অনেক শুনেছি।
অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ। তাদের ভক্তি মুখে, প্রদর্শনেচ্ছায়, মনে কিংবা কাজে নয়। অবশ্য সাধারণ মানুষ কে দোষ দিয়ে লাভ নেই। তারা হুজুর ইমাম সাহেবদের কাছে আসে, ইসলাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, অথচ তারা জানে না ইসলামের জানার পরিধির সীমা পরিসীমা, তাই মোল্লা সাহেব, দু চারটা সূরা শিখিয়ে দেন, কিছু দোয়া দুরুজ, ত্বরিত ফলাফল লাভের কিছু আমল, এবং কোরআন হাদিস গ্রন্থে চুম্বনের মাধ্যমে সম্মান প্রদর্শন অতঃপর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন, না জানার কারণে হুজুর যা বলেন তাকেই তারা পূর্নাঙ্গ ইসলাম বলে ভেবে নেন।
আর হুজুর কেনইবা সাধারণ মানুষ কে সব শিখাতে যাবে, কোরআন অধ্যয়নের প্রেক্টিস করাবে? এতে করে সাধারণ মানুষ কোরআন অধ্যয়ন করতে পারলে হুজুর সাহেবের মুখোশ উন্মোচিত হয়ে যাবে, ধোকা দিয়ে বোকা মানুষদের ঠকিয়ে নিজের বুজুর্গীপনা জাহির করতে পারবে না, পারবে না অনিচ্ছা সত্ত্বেও বুংবাং ইয়া বড় মোনাজাত করে হুদাই মেজবানের ঘরে বরকত দানের দোয়া করে বাধ্যতামূলক হাদিয়ার টাকায় পকেট ভারী করতে।
قال حكيم هذه الأمة الصحابي الجليل أبو الدرداء رضي الله عنه: كن عالماً أو متعلماً أو مستمعاً أو محباً ولا تكن الخامس فتهلك ... أي لا تكن مبغضاً لأهل العلم ...
والجاهلون لأهل العلم أعداء ..
বড় মাপের একজন সাহাবী আবুদারদা রা. বলেছেনঃ ।
আশাকরি ব্যপারটি মাথায় রাখবেন।
হা, হুজুর শব্দটির ব্যবহার নেতিবাচক হিসেবে ভাল দেখায় না। তবে বিপথগামী আলেমের সংখ্যাতা নেহায়েত কম নয়। আর আমার মন্তব্যটি তাদের উদ্দেশ্যে নয় যারা সঠিকভাবেই নিজে শিখে এবং অন্যদের শিখায়। এটা কে না বুঝে যে, সাধারণ মানুষ সূরা কেরাত পারে না তাই তাদের দুই একটা সূরা দিয়ে করানো হয়য়!
আমি আবারো বলছি, মনতব্যটি তাদের উদ্দেশ্যে যারা অন্যেরা জেনে যাবে বলে সাধারণ মানুষ কে কিছু জানায় আর ভাব দেখায় বাকীটা উনাদের মত বড় মাওলানাদের পক্ষেই জানা সম্ভব,তাই জানতে বেশি বেশি হাদিয়া সমেত আসা চাই।
দুঃখ না নিলেই খুশি হব। ব্যক্তি দোষে সবাইকে দোষী করা উচিত করা, আমি জানি এবং তা বিশ্বাস করি, তবে যাদের দোষের কারণে মানুষ বিভ্রান্ত হয়য় তাদের জন্য সমালোচনা যে করতেই হয়য়।
ভাইটি আমার, আলেম ওলামা আমার গর্ব, আমার অহংকার। তাদের নিয়েইতো আমরা বাংলার জমিনে ইসলামের ভিত মজবুত করার স্বপ্ন দেখি এবং তদানুযায়ী কাজ করি।
আবারো বলছি, ব্লগে কেউ আমার কথায় কষ্ট পেলে আমার খুব খারাপ লাগে। আপনার কষ্ট দূর হয়েছে কি না জানালে তবেই আমার অস্থির মন শান্ত হবে।
একটা বই আমার ভালো লাগা।
ইসলামকে জানতে হলে - আবু তাহের মিসবাহ।
খুব ভালো মানের একটা বই।
সংগ্রহে রাখার মত।
জাজাকাল্লাহ ভাইয়া।
আমার ব্লগে যেনো সবসময় আপনার গঠনমূলক মন্তব্য পাই। হামমমমম
চমৎকার অনুভূতি সম্পন্ন পোস্টটি সত্যি মনে দোলা দিয়ে গেলো!লেখক খুব সুন্দর ভাবেই বিশ্লেষন করেছেন আমাদের সমাজে সঠিক সন্মান করার পরিবর্তে যে বাড়াবাড়ি হয়ে থেকে!
এর সুন্দর, অনুপ্রানীত করার মতোন লিখাটি শেয়ার করে পড়ানোর সুযোগ করে দেয়ার জন্য শুকরিয়া!
আল্লাহ লিখককে উত্তম মর্যাদা দান করুন দুনিয়া এবং আখিরাতে!জাযাকাল্লাহু খাইর!
তাই শেয়ার করলাম জাজাকাল্লাহ আপু অপূর্ব কমেন্টস এর জন্য।
অনেক অনেক ধন্যবাদ মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
বয়ানুল কুরআন এর কোন বাংলা তাফসীর আছে?
আপনার অনুবাদ পড়ে বয়ানুল কুরআনের প্রতি একটা ভালোবাসা তৈরি হয়েছে।
আমার সংগ্রহে মারেফুল কুরআন আছে
এবং হাতের কাছে ইবনে কাসির আছে আমি চাচ্ছি বয়ানুল কুরআন এর বাংলা তাফসির।
জাজাকাল্লাহু খাইরান আবারো।
ইনশাআল্লাহ কিতাব প্রকাশ হবে ।
আমার খান ভাইয়ার সাথে যোগাযোগ আছে ।
আলহামদুলিল্লাহ।
অনেক অনেক শুকরিয়া।
জাজাকাল্লাহ।
ইনশাআল্লাহ।
আমার সাত ছেলেমেয়ে সবাই কুরআনুল কারিমের হাফেজ এবং হাফেজা হবে ইনশাআল্লাহ।
জাজাকাল্লাহ প্রিয় ভাইয়া।
ভাইয়া বিয়ে করেছেন তো?
গতকাল আমার প্রিয় মুফতী সাহেব আমার বিয়ের ব্যাপারে ফিকির করবেন নিজ থেকেই বলেছেন।
ইশশশ নিয়ত করতে কি বাধা আছে নাকি?
প্রাণ ছুঁয়ে গেলো লিখাটি আলহামদুলিল্লাহ্।
মহান রাব্বুল আলামীন লেখক এবং শেয়ার করার জন্য আওন্মনিকে যেন দুনো জগতে উত্তম পুরুস্কারে ভূষিত করেন। আমীন।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
খাম্মুনি কেমুন আছেন আপনি?
সবাই ভালো আছেতো!?
ঐ হারিকেনটার কোন খোঁজ নেই!
ইশশসসসসসসসস
ন : আমি বিশ্বাস করি, কুরআন কারীম আল্লাহ তা‘আলার কালাম। সর্বশেষ আসমানি কিতাব। কিয়ামত পর্যন্ত এই কিতাবে কোনও রকমের পরিবর্তন-পরিবর্ধন হবে না। কুরআন কারীম লওহে মাহফুযে সংরক্ষিত আছে। কুরআন কারীম হেফাযতের দায়িত্ব আল্লাহর নিজের।
আমি এও বিশ্বাস করি, কুরআন কারীম মাখলুক নয়। আল্লাহর সৃষ্টি নয়। কুরআন আল্লাহর কালাম। আর ‘কালাম’ আল্লাহর একটা সিফাত। আল্লাহ তা‘আলা যেমন চিরস্থায়ী, তার সিফাত-বৈশিষ্ট্যও চিরস্থায়ী।
-শাইখ মুহাম্মাদ আতিকুল্লাহ।
আমার খাম্মুনির ভালো লেগেছে আমারো ভালো লেগেছে।
খুব খুব শুকরিয়া খাম্মুনি।
শুকরিয়া খুব খুব।
জাজাকাল্লাহু খাইরান।
মন্তব্য করতে লগইন করুন